মোহাম্মদপুর থানা এলাকা হতে ভুয়া ডিবি পরিচয় দুই জন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-২।

র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বাংলাদেশের মানুষের কাছে একটি আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতীক। বিভিন্ন ধরণের চা ল্যকর অপরাধের স¦রূপ উদ্ঘাটন করে অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আনার কারনেই এই প্রতিষ্ঠান মানুষের কাছে আস্থা ও নিরাপত্তার অন্য নাম হিসাবে গ্রহণ যোগ্যতা পেয়েছে। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে অপরাধীরা নিত্য নতুন অপরাধ করছে তার মধ্যে প্রতারণা অন্যতম। বিভিন্ন প্রতারক চক্র নানা কৌশলে সাধারন মানুষের বিশ্বাসকে পুঁজিকরে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা ও সম্পত্তি। প্রতারক চক্র তাদের উদ্দেশ্য সফল ও মানুষের কাছে বিশ্বাস যোগ্যতা অর্জনের জন্য বহুরূপী সাজে নিজেকে সাজিয়ে উপস্থাপন করে মানুষের সামনে। ইতিপূর্বে ভূয়া মেজর, ভূয়া ক্যাপ্টেন, ভূয়া ডিবি এবং পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তার নাম ও পদবী ব্যবহার করে প্রতারণার জন্য বিভিন্ন প্রতারককে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।
র্যাবের কাছে বেশ কিছু জায়গা থেকে এই ধরনের প্রতারণার কিছু তথ্য আসার পর র্যাব-২ এর একটি বিশেষ দল বিষয়টি নিয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করে। এরই প্রেক্ষিতে গত ১১/১০/২০১৯ তারিখ ১৯.৩০ ঘটিকার সময় মোঃ রুবেল সরদার বাসা হতে চা খাওয়ার উদ্দেশ্যে ডিএমপি ঢাকার মোহাম্মদপুর থানাধীন রায়ের বাজার বুদ্ধিজীবি কবরস্থানের ১নং গেইট এর বিপরীত পার্শ্বে মকবুল মাস্টারের বাড়ীর সংলগ্ন জনৈক সোহাগের চা দোকানে চা খাওয়ার সময় উক্ত দোকানের সামনে ০২ জন লোক এসে কাউকে কিছু না বলে আমার দেহ তল্লাশী করে। দেহ তল্লাশী করে আমার নিকট থাকা বাড়ীভাড়া বাবদ নগদ ৩০০০/-টাকা ও আমার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। আমি পরিচয় জানতে চাইলে তারা বলে যে, “আমরা ডিবির লোক” তুমি আমাদের সাথে চলো। এই বলে বর্ণিত ডিবি পরিচয় ধারী একজনের কোমরে থাকা পিস্তলের কভারের উপর হাত দিয়ে বলে এই দেখ ভিতরে পিস্তল আছে এই কথা বলে আমাকে জোর করে একটি সিএনজিতে করে বছিলা তিন রাস্তা মোড় সিএনজি ষ্টেশনের খালী জায়গায় এনে আমাকে কিল ঘুষি মেরে আমার মোবাইল ফোন দিয়ে বাসায় ফোন করে নগদ ৫০,০০০/- টাকা নিয়ে আসতে বলে। টাকা নিয়ে আসলে আমাকে ছেড়ে দিবে, না হলে আমাকে মেরে লাশ বানিয়ে ফেলবে বলে হুমকী প্রদান করে। একপর্যায়ে আমি মৃত্যু ভয়ে আমার মোবাইল ফোন হতে আমার মায়ের মোবাইলে ফোন করি। আমার বড় ভাই মোঃ জাকির সরদার ফোন রিসিভ করলে আমি বলি, ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ২ জন লোক আমাকে সোহাগের চা দোকানের সামনে হতে বছিলা তিন রাস্তা মোড়ের দিকে নিয়ে এসে আমার কাছে তারা ৫০,০০০/- টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে। টাকা না দিলে আমাকে মেরে লাশ বস্তায় ভরে নদীতে ফেলে দিবে বলে হুমকি দিচ্ছে। আমার ভাই জাকির সরদার ১ ও ২ নং আসামীর সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কথা বললে মুক্তিপণ বাবদ ৫০,০০০/- টাকা নিয়ে দ্রæত বছিলা তিন রাস্তার মোড়ের দিকে আসতে বলে। এর পর জাকির হোসেন র্যাব-২ অফিসে এসে র্যাবের সহযোগিতা চাইলে র্যাব-২ বিষয়টি দ্রæত আমলে নিয়ে তার ভাইকে উদ্ধারের জন্য ২২.৫০ ঘটিকায় র্যাব-২ এর আভিযানিক দল ডিএমপির ঢাকার মোহাম্মদপুর থানাধীন বছিলা রোডস্থ ৪০ ফিট রাস্তার মুখে চৌধুরী রিয়েল এস্টেট জামে মসজিদ এর বিপরীত পার্শ্বে থেকে ১। মোঃ ইমরান সুমন (৪২), ২। মোহাম্মদ আলী আকবর (২৫)কে গ্রেফতার করা হয় এবং গ্রেফতারকৃত আসামীদের নিকট হতে মোঃ রুবেল সরদারকে উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ ইমরান সুমনকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় সে ভূয়া এসআই ইরান নাম ধারণ করে তার অপর সহযোগী আলী আকবরকে সাথে নিয়ে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন বয়সী লোকজনকে ডিবি পুলিশে পরিচয় দিয়ে কৌশলে অপহরণ করে মামলা মোকদ্দামায় ভয় দেখিয়ে মুক্তিপণ হিসাবে নগদ অর্থ ও চাঁদা আদায় করে আসছে।
প্রতারনার বিষয়ে তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যাদি যাচাই বাছাই করে র্যাব-২ ভবিষ্যতেও এ ধরণের অভিযান অব্যাহত রাখবে। প্রতারকদের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে।